Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped


 ০৪ নং টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে  তথ্য বাতায়নে  আপনাকে স্বাগতম  -------------জরুরী প্রয়োজনে..............০১৫৬৮৯৫০৭১৬


           


২০২৪ ইং জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাসিক রিপোট নোটিশ বোর্ড অন্তরভুক্ত করা হয়েছে- চলমান............




দর্শনীয় স্থান

বাংলাদেশের প্রথম ‘পুলিশ জাদুঘর’ লালমনিরহাটে


পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে বাংলাদেশে প্রথম ‘বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর’ গড়ে উঠেছে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় উপজেলায় ব্রিটিশ আমলের একটি থানা ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে ওই জাদুঘর।



১৯১৬ সালে নির্মিত ঐতিহাসিক পরিত্যক্ত ভবনটিতে জাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা। গত ২২ জুন জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি এই জেলায় প্রথম নারী এসপি হিসেবে যোগ দেন আবিদা সুলতানা। ২০১২ সাল থেকে তিনি ঢাকাস্থ বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। পরে ২০১৭ সালে তিনি জাদুঘরের পরিচালকের দায়িত্ব পান। ওই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হাতীবান্ধা থানার পরিত্যক্ত ওই ভবনে বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর স্থাপনের কাজ হাতে নেন।



এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, “দুইবছর ধরে এ জেলায় দায়িত্ব পালন করেছি। মাদক, নারী অধিকার ও আলোচিত মামলা নিয়ে মাঠে গিয়ে কাজ করছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকের কাছে সম্মান পেয়েছি। এ ছাড়া গত মাসে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়েছি। র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়েছেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য।”

দেশের প্রথম ‘পুলিশ জাদুঘর’ নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, “লালমনিরহাটের বুড়িমারীর হাসর উদ্দিন বিদ্যালয়ে ৬ নম্বর সেক্টর ছিল। ওই সময়ের এমপি আবেদ আলীর নেতৃত্বে পাটগ্রামের পুলিশ মুক্তি পুলিশ হিসেবে কাজ করেছে। তাই লালমনিরহাটে জাদুঘর নির্মাণ করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছিল।”

পুলিশ সুপার বলেন, “বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগে প্রথম বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ। এরপরই বাংলাদেশে ৯ মাস যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তাই মুক্তিযুদ্ধের সময় পুলিশের ভূমিকা অনেক বড় ছিল। সেসব প্রেরণা থেকে পুলিশ জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ব্রিটিশ আমল থেকেই পুলিশের কৃতিত্বের অনেক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে। নতুন প্রজন্ম অনেক কিছুই জানে না। তাই পুলিশ জাদুঘর বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”



জাদুঘরটি উদ্বোধনের পর থেকে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীসহ দেশ-বিদেশের সব দর্শনার্থী পুলিশের ইতিহাস-ঐতিহ্য জানতে পারবেন।

বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর লালমনিরহাটে মোট সাতটি গ্যালারি রয়েছে। প্রতিটি গ্যালারিতে রাখা নিদর্শনগুলো দর্শক ও গবেষকদের সামনে তুলে ধরতে কাচের আবরণ ও আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। ওই জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বাহিনীর নানা তথ্য সবার জন্য উপস্থাপন করা হবে।

গ্যালারিগুলোয় সুলতানি ও মোগল আমল, ব্রিটিশ আমল, ভারতীয় উপমহাদেশে পুলিশের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ তুল ধরা হয়েছে। ২ নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে ব্রিটিশ আমল, আধুনিক পুলিশের যাত্রা। ৩ নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে রয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশ। ৪ নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে ডার্করুম ও গ্যালারি। ৫ নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে মুক্তাঞ্চলে মুক্তি পুলিশ।
মুক্তিযুদ্ধকালে ৬ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। সে সময় গঠন করা হয়েছিল মুক্তাঞ্চলের মুক্তি পুলিশ। সেসব কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ কিছু নিদর্শন থাকছে এই গ্যালারিতে। ৬ নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং ৭ নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ গ্যালারি, আধুনিক সময়কাল।

কলেজ শিক্ষক আহসান হাবিব জানান, ওই জাদুঘর থেকে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু পরিচিত হতে পারবে। জানতে পারবে প্রাচীনকালে পুলিশের সব কাজকর্ম থেকে শুরু করে ইতিহাস।



মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লালমনিরহাট সাবেক জেলা কমান্ডার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর জেলার ব্রিটিশ আমলের একটি থানা ভবনে নির্মাণ করায় আমারা গর্বিত। ওই জাদুঘরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানসহ মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের ইতিহাস বিষয়ে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে।”

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান জানান, লালমনিরহাটে বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর নির্মিত হয়েছে। এটি জেলাবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরেকটি উপহার। এই জাদুঘর থেকে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু জানতে পারবে। পুলিশ বাহিনীর ইতিহাসের সত্যতা মিলবে এই জাদুঘরে।